বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জে লিচুর নাম ‘মঙ্গলবাড়িয়া’ ১২ কোটি টাকা বিক্রির আশা চাষীদের

কিশোরগঞ্জে লিচুর নাম ‘মঙ্গলবাড়িয়া’ ১২ কোটি টাকা বিক্রির আশা চাষীদের

স্টাফ রিপোর্টার: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই লিচুর বাগান। প্রতিটি গাছের দিকে তাকালে শুধু লাল টুক-টুকে রসে ভরা লিচু আর লিচু। জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এ মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের অবস্থান। এ কারণেই এ গ্রামের নামের সাথে লিচুরও নামকরন করা হয়েছে ‘মঙ্গলবাড়িয়া’ লিচু।
জৈষ্ঠ্য মাসের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয় লিচু বিক্রির ব্যাস্ততা। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এ লিচুর চাহিদা এখন দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক বাজারেও। মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার লিচুর খ্যাতি এখন দেশজুড়ে। কিশোরগঞ্জ জেলা জুরে এখন বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজারগুলোতে চলছে লিচু বিক্রির ধুম।
এ লিচুর স্বাদ বাজারে অন্যান্য লিচুর চেয়ে ভাল। পাশাপাশি মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু আগাম জাতের হওয়ায় অন্যান্য লিচু বাজারে আসার ১৫ দিন আগেই বিক্রি শুরু হয়। তাই মৌসুম এলেই জেলার সবকটি উপজেলার মানুষসহ দূরদূরান্ত থেকে এ গ্রামে ছুটে আসেন লিচু প্রেমী পর্যটকটরা।
নরসিংদী জেলা থেকে থেকে আসা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত এ লিচুর গ্রামে ৪বার এসেছি। গ্রামে ঢোকার পর থেকে যেদিকেই তাকাই; সেদিকেই গাছে লাল রঙের রসালো লিচু ঝুলছে। সারাদিন ঘুরে ঘুরে দেখব আর লিচু খাব। পরিশেষে বাড়িতে কিনে নিয়ে যাব।’
জেলার ভৈরব উপজেলা থেকে আসা ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘মৌসুম এলেই অন্যান্য জেলার আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি পাঠাতে এবং নিজের পরিবারের জন্য মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু কিনতে আসি। পাশাপাশি পরিবারের সবাই মিলে এমন চোখ জুড়ানো মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতেও ছুটে আসা হয় একটা দিন সময় করে। দুই’শ লিচু কিনলাম, প্রতি শ’লিচুর দাম নিলো ছয়’শ টাকা করে।’
অন্যান্য বছরের মতো এবারও ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গলবাড়ীয়া’ লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দেখতে লাল টুকটুকে ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এ লিচুর খ্যাতি রয়েছে দেশ-বিদেশে। চলতি মৌসুমে ৩০ হাজারেরও বেশী গাছ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির প্রত্যাশা এ গ্রামের চাষিদের।
লিচু চাষি মো. ছফির উদ্দিন জানান, আমার দুই’শ লিচু গাছ রয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে এবার। বিক্রি শুরু করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ১০ লক্ষ টাকার লিচু বিক্রি হবে। আমাদের লিচু বাজারে নিতে হয়না। পর্যটকরা যারা ঘুরতে আসেন এখানে তাদের কাছেই বেশিরভাগ লিচু বিক্রি হয়ে যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. সাইফুল হাসান আল-আমিন জানান, এ বছর এ গ্রামটিতে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার আমরা দেশের চাহিদা পুরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করব। আগাম জাতের লাভজনক এ ‘মঙ্গলবাড়িয়া’ লিচুর আবাদ সমস্ত জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana